বিবাহ বিচ্ছেদের কারন কি
☞আমার বন্ধু 'ক'। ক্লাসের সাহিত্যিক মনা হাস্যরসের একজন মানুষ। সবাই কে ছাড়িয়ে বিয়ের পিড়িতে ও-ই প্রথম বসেছিলো। বিধিবাম, সুখ ওর কপালে ধরা দিলো না। কিছুদিন হলো সন্ধ্যা নদীর পাড়ে বসে ওর বিবাহ বিচ্ছেদের হৃদয় বিদারক কাহিনী শুনতেছিলাম।
☞বন্ধুবর বড় ভাই 'খ'। একাডেমিক ক্যাম্পাসে থাকাকালীন ওভাবে পরিচয় না-থাকলেও কাজের সুবাদে কয়েকমাস এক সাথে থাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী হয়ে যায়। ভাঙ্গা হৃদয়ে হাসি মুখে বললেন, "ভাই আপনার ভাবী চলে গেছেন"। জলে টলমল চোখ দেখে কারণ জিজ্ঞেস করার দুঃসাহস না-করলেও নিজ থেকেই বলা শুরু করলেন।
☞বয়সে পাঁচ ছয় বছর বড় শ্রদ্ধার ভাই 'গ'। সপ্তাহে একদিন বিকালে সময় দিয়ে নিজেই অনবরত কাউন্সিলিং করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কাছ থেকে তার অবস্থা জেনেছি। অতিশোকে পাথর বনে যাচ্ছেন। জিবনের ৩০ বসন্তের পর ধরা দেওয়া প্রেয়সীকে কয়েকমাস রাখতে ব্যার্থ হয়েছেন। ব্যার্থতা যে তার নয় সেটা অনেকটাই নিশ্চিত। কিন্তু সমাজের চোখে তিনি ব্যার্থ।
☞চেহারা-সুরতে মাশাল্লাহ। পেশায় একটি প্রাইভেট কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। ইনকাম সোর্স অনেক। তাঁর মুখে শুনা,তিনি মাসে ৩লাখ প্লাস ইনকাম করেন। বললাম, ফেসবুকে দেখলাম বিয়ে করেছেন "ট্রিট দিবেন না"! হাসি মুখে বললেন তোমার ভাবিকে বিদায় দিয়েছি। শ্রদ্ধার দরুন কারণ জিজ্ঞেস করি নি। পরে অবশ্য তিনিই ইশারা ইঙ্গিতে বলে দিয়েছেন।
☞ফেসবুকের সুবাদে হাবিবতি সিরিজ পড়তাম। দূর থেকে যতটুকু বুঝলাম তিনি অসম্ভব মিশুক এবং সফল মানুষ। নিয়মিত তাঁকে পড়তাম। নিউজ ফিডে না-আসলে সার্চ দিয়ে দেখতাম কিছু লিখেছেন কি-না। ফেসবুকের কল্যাণেই দেখলাম তাঁর হৃদয় ভেঙে গেছে। নিজ থেকেই কাউন্সিলিং করছেন। ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কাউকে জান্নাতি বলার বিধান কি?
লেখা বড় হয়ে যাচ্ছে। আরো কিছু ঘটনা রয়েছে। সবগুলো ঘটনা বিবেচনা করে যা বুঝলাম:
বিবাহ বিচ্ছেদের কারন
✪ কূফূ না-মেনে বিবাহ।
✪ মাত্রাতিরিক্ত রাগ এবং ইগো।
✪ দ্বীনি ফেমিনিজমে আক্রান্ত ফ্যামিলি।
✪ মায়ের সন্তান হারানোর ভয়।
✪ বাপের বাড়ির সব কিছু নিয়ে বড়াই করা।
✪ পর পুরুষে আসক্তি।
✪ পারস্পরিক ছাড় দেওয়ার মানসিকতা না-থাকা।
✪ কর্মক্ষেত্রে ব্যর্থ, যার প্রভাব সংসারে পড়ে।
✪ স্ত্রী কে পরিপূর্ণ কোয়ালিটি সময় না দেওয়া।
আল্লাহ তায়ালার একান্ত রহমত এবং আশ্রয় ছাড়া বৈবাহিক জিবনে সবাই অসহায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাযত করুক। আমিন।