বিদায়াতে হাসানাহ বলতে কিছু আছে কি-না?
মিলাদুন্নবী সাঃ উদযাপন কে আমরা মুসতাহসান বলি। নিয়ত শুদ্ধতার বিচারে যার সওয়াবের আশা করা যায় এবং এটি বিদায়াতে হাসানার-ও অন্তর্ভুক্ত।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্তম প্রথা বা কাজের প্রচলন করে সে তার এ কাজের সাওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এ কাজ দেখে তা করবে সে এর বিনিময়েও সাওয়াব পাবে। তবে এতে তাদের সাওয়াব কোন অংশে কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে (ইসলামের পরিপন্থী) কোন খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে, তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) বহন করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ করে এ কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোন অংশেই কমবে না।
- মুসলিম শরীফ হাদিস নং-২২৪১
বিদায়াতে হাসানার কথা আসলেই অনেকে ইবনুল মাজিশুন থেকে বর্ণিত ইমাম মালেক রঃ এর একটি কওল নকল করেন। ইবনুল মাজিশুন বলেন আমি ইমাম মালেক রঃ কে বলতে শুনেছি, 'যে ব্যাক্তি কোনো বিদায়াত শুরু করে সেটাকে হাসানাহ মনে করবে, তাহলে তার কর্মনুযায়ী বুঝাযায় মুহাম্মদ সাঃ রিসালাতের দায়িত্বে খেয়ানত করেছেন।'
-আল আহকাম ফি উসূলিল আহকাম ৬ষ্ঠ খন্ড ৫৮ পৃষ্ঠা।
প্রকৃতপক্ষে ইমাম মালেক রঃ থেকে এই কওল প্রমাণিত নেই। এই বর্ণনার সনদে আব্দুল মালিক হাবিব নামের রাবী আছেন। তার ব্যাপারে জরাহ তা'দীলের ইমাম গনের মতামত:-
১.ইবনু হজম বলেন, সে সেকাহ নয়।
২.ইবনু হাজার আসকালানী রঃ বলেন, সে মাত্রতিরিক্ত ভুলকারী।
৩. হাফিয আবু বকর বলেন,সে হাদিস জানে না।
৪.হাফেজ ইবনু আব্দিল বার রঃ বলেন, সে মিথ্যাবাদী।
যউফত বেশি হওয়ায় তার বর্ণনা গ্রহনযোগ্য নয়।
আরও পড়ুন: মিলাদ-মাহফিলের বৈধতা
ইমাম মালেক রঃ থেকে বর্ণিত রয়েছে - তিনি কখনো সম্মানার্থে মদীনায় জুতা পায়ে হাটেন নি। সাহাবীদের কারো থেকে যেহতু এমন কাজ প্রকাশিত হয় নি তাহলে ইমাম মালেক রঃ কি প্রত্যাখ্যাত বিদায়াত করেছেন? কেননা তিনি এমন কাজ করেছেন যা তার পূর্ববর্তী সাহাবী তাবেয়ীরা করেন নি। রাসূলুল্লাহ সাঃ এর প্রতি ভালোবাসা এবং মদীনার প্রতি এমন সম্মান প্রদর্শন ইতিপূর্বে কারো থেকে প্রকাশ পায় নি।
প্রিয় পাঠক এখন কি আপনি বলবেন, ইমাম মালেক সাহাবীদের চেয়েও কি রাসূলুল্লাহ সাঃ এবং মদীনা কে বেশি ভালোবাসে? প্রকৃতপক্ষে শরীয়তের বাহিরে না গিয়ে যে কোনো উপায়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা দোষণীয় নয়। আমরা অনেক উপায়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকি। মিলাদ মাহফিল এবং আনন্দ র্যালি-ও আমাদের ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম। হাদিসের ভাষ্যনুযায়ী এটি বিদায়াতে হাসানার অন্তর্ভুক্ত হবে।