মিলাদ-মাহফিল নিয়ে মিজান হারুন নামে আমাদের এক ভাইর পোস্ট: আমার কিছু নিবেদন।
দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে মিলাদুন নবী সাঃ উদযাপন।
প্রচলিত মীলাদ-মাহফিলকে আকাবিরে দেওবন্দ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইমামে রব্বানী হযরত গঙ্গুহী, হাকীমুল উম্মত হযরত থানভী, মুফতী মাহমূদ হাসান গঙ্গুহী, কিফায়াতুল্লাহ দেহলভী, খলীল আহমদ সাহারানপুরী, যফর আহমদ উসমানী, মুফতী মুহাম্মাদ শফী'সহ আকাবির-আসলাফের যারাই এব্যাপারে কথা বলেছেন, সবাই প্রচলিত মীলাদ-মাহফিল এবং বিশেষ কোনো দিনে (যথা ১২ ই রবীউল আউয়াল) প্রচলিত পদ্ধতিতে ঈদে মীলাদুন্নবী পালনকে সরাসরি 'বিদআত' আখ্যা দিয়েছেন।
হ্যাঁ কোনো দিন ও তারিখ নির্ধারণ ব্যতীত এমনিতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সীরাতের আলোচনা, তাঁর মাওলিদ তথা জন্ম সংক্রান্ত কথাবার্তা বলা, তাঁর জন্মে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা নিষিদ্ধ নয়। এটা সাহাবাদেরও আমল। সালাফের আমল।
এটি তার দীর্ঘ একটি পোস্টের অংশবিশেষ। সার্চ করে ফুল পোস্ট দেখে আসতে পারেন।
ঈদে মিলাদুন নবী সাঃ উদযাপন।
এই পোষ্ট দ্বারা বুঝাযায় মিলাদ-মাহফিল উদযাপনে ভাইর সমস্যা শুধু দিন ও তারিখ নির্ধারণ এবং গতশতকে অতীত হওয়া মুষ্টিমেয় কয়েকজন দেওবন্দী হযরতের ফতোয়া নিয়ে। নয়তো সীরাত আলোচনা এবং মাওলিদ সংক্রান্ত কথাবার্তা ও আনন্দ-কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নিষিদ্ধ নয়।
শ্রদ্ধেয় ভাইর কাছে জানতে ইচ্ছে করে, আমরা না-হয় দিন তারিখ নির্ধারণ করে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্মবৃত্তান্ত আলোচনা এবং আনন্দ প্রকাশ করে মহা অন্যায় করছি। কিন্তু ভাই দেশব্যাপী নির্দিষ্ট দিন-তারিখে বাৎসরিক মাহফিল করে সারা বৎসরের মাদ্রাসার খরছ উঠানো এবং দিন তারিখ নির্ধারণ করে বাৎসরিক,সপ্তাহিক তাবলীগের কার্যক্রম পরিচালনা, দুই চার মাস পূর্বে তাফসির মাহফিলের দিন তারিখ নির্ধারণ করা, দরস তাদরীস এবং বিষয়ভিত্তিক কোর্সের জন্য নির্ধারিত দিন তারিখ ঠিক করার কি হবে? এগুলো কি বিদায়াত হবে? উত্তর যদি "না" হয়, তাহলে মিলাদ-মাহফিলের দিন তারিখ নির্ধারণ করে আনন্দ প্রকাশ করা বিদায়াত হবে কেন?
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে-
রাসূলুল্লাহ সাঃ অথবা কুরুনে ছালাছার কেউ কি নির্ধারিত দিন-তারিখে প্রচলিত মাহফিল করা, দিন তারিখ নির্ধারণ করে তাবলীগ কার্যক্রম পরিচালনা, নির্দিষ্ট দিন তারিখে দরস তাদরীস করেছেন?
এগুলোর জন্য যদি প্রচলিত আর সনাতন না খুঁজে শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কয়েকজন আকাবির কে বাঁচাতে সালাফদের মিলাদ বৃত্তান্ত এবং প্রচলিত মিলাদ-মাহফিলের পার্থক্য খুঁজে বেড়ান। এর চেয়ে নির্লজ্জতা আর কি হতে পরে!
আপনার আকাবির সীমানা দেওবন্দী হযরতদের পর্যন্ত এজন্য আপনাদের মনমস্তিস্ক এদের বাহিরে চিন্তা করতে শিখেনি, এদের বাতানো পথের বাহিরে আপনি বিদায়াত খুঁজে পান। ইমাম সুয়ূতির হাবী লিল ফতওয়াসহ অসংখ্য আকাবির-আসলাফদের কওল থাকার পরে-ও আপনি মিলাদ-মাহফিলের অনুষ্ঠান কে কোন কোন আকাবিরের ব্যাক্তিগত আমল বলে চালিয়ে দিতে চান শুধুমাত্র কয়েকজন দেওবন্দী হযরতের ফতোয়া কে বাঁচাতে । শতশত আকাবির-আসলাফের পালনীয় মিলাদ-মাহফিলকে ব্যাক্তিগত আমল না বলে, যে কয়েকজন এটাকে বিদায়াত বলে তাদের ফতোয়াকে ব্যাক্তিগত কওল বলে দেওয়া যায় না? ভাই!
অনেক প্রশ্ন ছিলো। সর্বশেষ একটা কথা বলবো- আচ্ছা ভাই! আনুষ্ঠানিক মিলাদ-মাহফিলের অনুষ্ঠান ৬শ হিজরীতে শুরু হলে-ও এটাকে প্রত্যাখ্যাত বিদায়াত বলেন, অথচ গত শতাব্দীতে আবিস্কৃত তাবলিগের দাওয়াতি পদ্ধতি কে কেন প্রত্যাখ্যাত বিদায়াত বলেন না?
আপনাদের কাছে তথাকথিত আকাবিরের কথা শিরোধার্য হলে-ও আমাদের কাছে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর ভালোবাসাই ঈমানের মূলমন্ত্র। এ জন্য আপনি আকাবিরের কথায় ক্ষান্ত থাকতে পারেন কিন্তু আমরা রাসূলুল্লাহ ভালোবাসা প্রকাশে ক্ষান্ত থাকবো না।
অনবরত লিখে যাবো। ইনশাআল্লাহ।