নারায়ে রিসালাত- ইয়া রাসূলাল্লাহ সাঃ বলা যাবে?
ছারছীনা আলিয়া মাদ্রাসা একাডেমিক ভবন |
না'রায়ে (না'রাতুন) শব্দের অর্থ আওয়াজ, আর তাকবীর মানে বড়/বড়ত্ব। সুতরাং না'রাতুত তাকবীর বা নারায়ে তাকবীর মানে বড়ত্বের আওয়াজ। প্রতিত্তোরে সমস্বরে সবাই বলে উঠে আল্লাহু আকবার। মানে আল্লাহ বড়।
সুতরাং:-
নারায়ে তাকবীর= বড়ত্বের আওয়াজ (বুলন্দ হোক)।আল্লাহু আকবার= আল্লাহ বড়।
পরের স্লোগান -
নারায়ে রিসালাত= রিসালাতের আওয়াজ (বুলন্দ হোক)।মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাঃ=মুহাম্মাদ সাঃ আল্লাহর রাসূল। ইয়া রাসূলাল্লাহ সা:= হে আল্লাহর রাসূল সাঃ।
এখন রিসালাতের আওয়াজ হোক এর প্রতিত্তোরে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্থলে ইয়া রাসূলুলাল্লাহ বলা বলা যথাযথ কি-না? এই প্রশ্নের উত্তরে বলবো 'না', যথাযথ নয়। রিসালাতের আওয়াজ বুলন্দ হোক এর প্রতিত্তোরে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলে রাসূলুল্লাহ সাঃ কে ডাকার চেয়ে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বলে তাঁর নামটিই উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয়।
প্রথমত:-
"মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ উপযুক্ত না-কি হে আল্লাহর রাসূল" বেশি উপযুক্ত।
যারা বলে ইয়া রাসূলাল্লাহ সা: বলা বেশি উপযুক্ত। তাদের রিজন হচ্ছে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলা যাবে না কেন? এটা তো সাহাবীদের সুন্নাত। তাঁরা রাসূল সাঃ কে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলতেন, এই ধরনের মানুষ ইয়া রাসূলাল্লাহর স্বপক্ষে অসংখ্য হাদীস নিয়ে আসেন। আসলে তাদের দাবী সত্য। অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাঃ কে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলা যাবে। কিন্তু নারায়ে রিসালাত বা রিসালাতের আওয়াজ বুলন্দ হোক এর প্রতিত্তোরে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলে রাসূল সাঃ কে আহ্বান করা যাবে কি-না সেই আলোচনা থেকে তারা অজান্তেই চিটকে যায়। তারা পড়ে থাকে স্রেফ পরের বাক্যটি নিয়ে। প্রথম বাক্যটির প্রতি খেয়াল রাখে না। বক্ষমান আলোচনায় সমস্বরে বলা বাক্যটি যে প্রথম বাক্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং হে আল্লাহর রাসূল বললে প্রথম বাক্যটির মর্মার্থ উদ্ধার হয় না সেটা আদৌও তারা বুঝতে চায় না। তারা ইয়া রাসূলাল্লাহ বলা না-বলা দিয়ে ওহাবী সুন্নী আইডেন্টিটি প্রকাশ করে।
দ্বিতীয়ত:
নারায়ে রিসালাতের এর প্রতিত্তোরে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ আমাদের মাসলাকের স্লোগান। আমরা নারায়ে রিসালাতের প্রতিত্তোরে ইয়া রাসূলুল্লাহ বলার চেয়ে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ বলাকে বেশি উপযুক্ত মনে করি। আপনি ইয়া রাসূলাল্লাহ বলতে চাইলে বলুন, তাতে আমাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। আমাদের যে আপনার মনমতো করেই ইয়া রাসূলাল্লাহ সাঃ বলতে হবে এই সংকীর্ণতা পরিহার করুন।
তৃতীয়ত:
ইয়া রাসূলাল্লাহ সাঃ বলা কে আমরা ফালতু স্লোগান বলি না।কে কি বলল আর না বলল সেটা নিয়েও আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমরা যাস্ট নারায়ে রিসালাতের প্রতিত্তোরে এটা বলি না,এতটুকুই।
আরও পড়ুন: চলমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের করণীয় কি?
নারায়ে রিসালাত-ইয়া রাসুলুল্লাহ সাঃ বলা যাবে না কেন?
এই স্লোগান পরিহার করা বা অপছন্দ করার কারণ যদি জিজ্ঞেস করেন, তাহলে বলবো রাসূলুল্লাহ সাঃ কে হাজির নাজির জেনে বাতিলরা ইয়া রাসূলল্লাহ সাঃ বলে থাকে। এই জন্য আমরা এটি পরিত্যাগ করি। আপনি বা আপনারা যদি হাজির নাজির না-জেনে নারায়ে রিসালাতের প্রতিত্তোরে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলেন সেটি সম্পূর্ণই আপনাদের ইচ্ছে।
যেমনটা আমরা আমাদের ইচ্ছে মতোই রাসূলুল্লাহ সাঃ কে হাজির নাজির না-জেনে সালাম দেই; ইয়া নাবী সালামুন আলাইকা,ইয়া রাসূল সালামুন আলাইকা।
আল্লাহ আমাদের মুখরপনার অতিরঞ্জিতা থেকে হেফাজত করুক। আমীন।