শিক্ষক বাবার মতো!
সেক্যুলার এবং তাদের মানসপুত্ররা দেদারসে প্রচার করছে, "শিক্ষক পিতার মতো"। কথাটি বাহ্যিক ভাবে সুন্দর হলে-ও এটির অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য বড়ই খতরনাক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষার সমর্থনে, মুক্তচিন্তার ধোঁয়া তুলে সর্বত্র এই বাক্যটির অবাধ ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে।
ওদের দাবী অনেকটা এমন- 'শিক্ষক যেহতু বাবার মতো তাই তাঁর সামনে পর্দার প্রয়োজনীয়তা নেই'।
তাদের প্রতিত্তোরে আমরা বুদ্ধিদিপ্ত কাউন্টার না দিয়ে ঠুনকো লজিকের ব্যবহার করছি, যা অত্যন্ত হাস্যকর। ওদের দাবীর কাউন্টারে আমাদের কী বলা উচিত ছিল আর আমরা কী বলছি!
অনেকেই তাদের দাবীর বিপরীতে লজিক দিচ্ছেন -
★ অনেক শিক্ষকের দ্বারা ছাত্রী ধর্ষিতা হচ্ছেন। তাহলে বাবার মতো কি ভাবে হবেন?
★ অনেক শিক্ষক স্বীয় ছাত্রী কে বিয়ে করছেন, তাহলে তাদের সম্পর্কের পরিচয় কি হবে? ইত্যাদি ঠুনকো লজিক অনেকে দাড় করাচ্ছেন। আসলে সেক্যুলারদের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী লজিকে আটকে গিয়ে আমরা-ও এসব বস্তাপচা লজিক প্রডাকশনে ব্যস্ত হয়ে গেছি।
বাহ্যিকভাবে এই লজিকগুলো পর্দার মূল প্রতিপাদ্যের প্রতিনিধিত্ব করে না। হ্যাঁ, হতে পারে এই লজিকগুলো মূল প্রতিপাদ্যের সাথে প্রাসঙ্গিক কিন্তু এগুলোকেই প্রধান কাউন্টার বা প্রতিত্তোর হিসেবে ধরার সুযোগ নেই। এসব বাচ্চা সূলভ লজিকের বিপরীতে সেক্যুলারিজম আপনাকে এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিবে যা আপনি কখনো কল্পনা করেন নি।
আচ্ছা ধরুন,
'শিক্ষকের কাছে ছাত্রী ধর্ষিতা হচ্ছে' এই লজিকের বিপরীতে সেকুলারিজম যদি আপনাকে চাচার কাছে ভাতিজি ধর্ষিতার লজিক এনে চাচাকে নন-মাহরামদের অন্তর্ভুক্ত করার ইলজাম দেয় তখন আপনি কি করবেন? অথচ ইসলামি শরীয়তে 'চাচা' মাহরামদের অন্তর্ভুক্ত।
আমাদের উত্তরগুলো এমন হওয়া উচিত- 'আমরা আল্লাহর দাস। আল্লাহর দাসত্ব'ই আমাদের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য। আল্লাহ তায়া’লা আমাদেরকে নন-মাহরামদের সাথে পর্দা করতে আদেশ করেছেন, আমরা পর্দা করবো। নন-মাহরাম ব্যাক্তি আমাদের শিক্ষক অথবা ভাই'য়ের মতো হোন বা অন্য কেউ। আল্লাহর অবাধ্য হয়ে পর্দার প্রয়োজনীয়তা ভুলে যাবো না'। আমাদের ফোকাস হওয়া উচিত,- পর্দার ব্যাপারে শরীয়াহ'তে কি বলা আছে,সেইদিকে।
আমাদের চেতনা এতটাই ভঙ্গুর হয়েছে যে, যুক্তিতর্কে প্রতিবাদ প্রতিঘাত করার বদলে আমরা আত্মরক্ষার উপায় খুঁজছি।
আরও পড়ুন: দ্যা এ্যালকেমিস্ট বই রিভিউ
আমাদের উচিত ছিলো সেক্যুলার রাম-বামের কান ধরে কথার ক্যাচকিতে ফেলে জিজ্ঞেস করা- "ঐ বান্দরের বাচ্চা, আল্লাহর আইনের প্রতি ধৃষ্টতা দেখানোর অধিকার তোরে কে দিছে?
সূরা আন-নূরে আল্লাহ তায়া’লা বলেন,
قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنٰتِ یَغۡضُضۡنَ مِنۡ اَبۡصَارِهِنَّ وَ یحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَهُنَّ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَا وَ لۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِهِنَّ ۪ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اٰبَآئِهِنَّ اَوۡ اٰبَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآئِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآءِ بُعوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اِخوَانِهِنَّ اَو بَنِیۡۤ اَخَوٰتِهِنَّ اَوۡ نِسَآئِهِنَّ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُهُنَّ اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡهَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَ لَا یَضۡرِبنَ بِاَرۡجُلِهِنَّ لِیُعۡلَمَ مَا یخۡفِیۡنَ مِنۡ زِیۡنَتِهِنَّ ؕ وَ تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ جَمِیۡعًا اَیُّهَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۳۱﴾
و قل للمومنت یغضضن من ابصارهن و یحفظن فروجهن و لا یبدین زینتهن الا ما ظهر منها و لیضربن بخمرهن علی جیوبهن و لا یبدین زینتهن الا لبعولتهن او اباىهن او اباء بعولتهن او ابناىهن او ابناء بعولتهن او اخوانهن او بنی اخوانهن او بنی اخوتهن او نساىهن او ما ملکت ایمانهن او التبعین غیر اولی الاربۃ من الرجال او الطفل الذین لم یظهروا علی عورت النساء و لا یضربن بارجلهن لیعلم ما یخفین من زینتهن و توبوا الی الله جمیعا ایه المومنون لعلکم تفلحون ۳۱
আর মুমিন নারীদেরকে বলুন, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না-করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
পর্দার করার জন্য এই আয়াতটিই যথেষ্ট। ব্যাস।