১২উল আউয়ালে নির্দিষ্ট তারিখে ঈদে মিলাদুন্নবী সাঃ উদযাপন নিয়ে বিভ্রান্তির সমাধান।
ঈদে মিলাদুন নবী সাঃ উদযাপন।
দিন-তারিখকে উপলক্ষ বানিয়ে আলোচনার আয়োজন করা আর আলোচনার জন্য দিন-তারিখ ঠিক করার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে।
আমরা আলোচনার জন্য দিন-তারিখ ঠিক করি কিন্তু কিছু মানুষ আমাদেরকে, দিন-তারিখকে উপলক্ষ বানিয়ে আলোচনা করি বলে ইলজাম দেয়। এটা আমাদের প্রতি জুলুমের শামিল।
মিলাদ-মাহফিল ১২ই রবিউল আউয়ালে করেন আর ১৩ রবিউল আউয়ালে করেন বা আপনার মন মতো যে তারিখেই করেন না কেন! এটা আপনার ইচ্ছেধীন। স্রেফ মিলাদ-মাহফিল টা কোনো ভাবেই বিদায়াত বলার সুযোগ নেই। কারণ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিরাতের আলোচনা কখনো বিদায়াত হতে পারে না। আর মিলাদ-মাহফিল সিরাতের অংশ বিশেষ।
মৃত বাবা মায়ের নামে চল্লিশা করার বিধান।
আমাদের দেশে কেউ মারা যাওয়ার পর সওয়াব পৌছানোর জন্য নির্দিষ্ট দিনে খাবারের আয়োজন করা হয়। মৃত্যুর ৩য় দিন ‘কুলখানি/ তিনদিনা’র ব্যবস্থা করা হয়। আর চল্লিশতম দিনে ‘চল্লিশা’ নামে ভোজনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন আসে এসব কি ইসলাম সমর্থন করে?
এর উত্তর হলো- মৃত ব্যক্তির কাছে ঈসালে সওয়াব/ সওয়াব পৌঁছানের উদ্দেশ্যে— কেউ যদি গরিব-মিসকীন ও এতিম-অসহায়দের খাবার খাওয়ায়, তাহলে সেটা জায়েজ আছে।
চল্লিশা, তিনদিনা ইত্যাদি বিষয়ের জন্য-ও একই কথা। ৪০ দিন বা ০৩ দিন উপলক্ষে খাবারের আয়োজন না বরং খাওয়ানোর জন্য ৪০ দিন বা ৩য় দিন নির্ধারণ করা । আপনি ইচ্ছে করলে ৪০তম দিন কেন! ৪১,৪২,৩০,৩৫ বা ০৬ মাস পরে-ও খাওয়াতে পারেন।
অনেকে আবার বলবেন মানুষ এসব কে আবশ্যক মনে করে তাই বিদায়াত হবে। মানুষ আবশ্যক মনে করলে সে ভুলের উপর আছে এটা তাকে বুঝান। তাকে বুঝিয়ে বলুন এটা আবশ্যক না বরং মোবাহ। আর বুঝানোটাই আপনার আমার দায়িত্ব। মুবাহ একটা বিষয় কে বিদায়াত বলে উম্মাহয় ফাটল ধরানো থেকে বিরত থাকুন।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকুলারিকরণ : প্রক্রিয়া ও বিভিন্ন পর্যায়
প্রথাগত খাবার আয়োজন সম্পর্কে ইসলাম
তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, বর্তমানে আমাদের দেশে কুলখানি বা চল্লিশা ঈসালে সওয়াব তথা সওয়াব পৌঁছানোর পরিবর্তে প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃত ব্যক্তির বাড়িতে নানা ব্যবস্থাপনায় ভোজন ও অন্যান্য রীতিনীতির আয়োজন করা হয় এবং এই রীতিনীতিতে কিছু কুসংস্কার ও যুক্ত হয়ে থাকে, যা নিতান্তই পরিত্যাজ্য বিষয়। এবং অনেক সময় দেখা যায়, অর্থসংকটসহ নানাবিধ অসুবিধা থাকার পরেও প্রথাগত কারনে অনেকে এসব অনুষ্ঠান করতে বাধ্য হয়। ইসলাম এই ধরনের প্রথাগত কাজকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না। বরং এসব ইসলামে সম্পূর্ণ অনুচিত ও পরিত্যাজ্য বিষয়।
প্রথাগত বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মৃত বাবা মায়ের কবরে সওয়াব পৌঁছাতে এধরনের খাবারের আয়োজন করা না-জায়েজ বা হারাম হবে না।