মিলাদুন্নবি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও জগদ্বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি রহ. এর উত্তর

মিলাদুন্নবি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও জগদ্বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি রহ. এর উত্তর:

(প্রশ্ন:১)মিলাদুন্নবি পালন করার হুকুম কি?

উত্তর:ইমাম ইবনে হাজার রহ. বলেন,

"মিলাদুন্নাবি পালন মূলত নতুন একটা বিষয়।   প্রথম তিন যুগের সালফে সালেহিন থেকে এর কোনো নজির পাওয়া যায় না। তারপরও এর ভাল-খারাপ উভয় দিক রয়েছে। যদি কেউ মিলাদুন্নাবি পালনের ভাল দিক বজায় রেখে খারাপ দিক বর্জন করে, তখন সেটা হবে বিদয়াতে হাসানাহ।

তবে মিলাদুন্নাবি পালনের ভিত্তি যা থেকে এর বৈধতা নির্ণীত হবে, তা আমার নিকট রয়েছে। আর সেটা হচ্ছে, যা বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে: 

"নবি করিম ﷺ মদিনা আসার পর দেখলেন যে, ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখছে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিল, এটা এমন একটি দিন, যে দিনে আল্লাহ তাআলা ফেরআউনকে পানিতে ডুবিয়েছেন। আর মুসা আলাইহিস সালামকে তার কবল থেকে মুক্তি দিয়েছেন।আমরা আল্লাহ তাআলার প্রতি শুকরিয়া স্বরূপ এ দিন রোজা রাখি। "

এই হাদিস থেকে বুঝা যায় আল্লাহ তাআলার নিয়ামত প্রদান অথবা আযাব হতে রক্ষা করার মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট দিনে অনুগ্রহ করলে,এজন্য তাঁর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। এবং প্রতি বছর সেই শুকরিয়া আদায়ের পুনরাবৃত্তি করাও উচিত।আল্লাহর শুকরিয়া আদায় হয় বিভিন্ন ধরণের ইবাদতের মাধ্যমে। যেমন, নামাজ, রোজা, দান সাদাকাহ ও তিলাওয়াত ইত্যাদি।যদি ব্যাপারটা এমনই হয়, তাহলে যেদিনে রহমতের নবির আত্মপ্রকাশ হয়েছে তার চেয়ে বড় নিয়ামত  কী হতে পারে?"


(প্রশ্ন:২)মিলাদুন্নবি কোন দিন পালন করব?

উত্তর :ইমাম ইবনে হাজার রহ. এরপর বলেন,

"উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, মিলাদুন্নবি পালনের জন্য রাসুল (সা)-এর জন্মদিন গবেষণা  করে যেকোনো একদিনে নির্দিষ্ট করা  উচিত। যাতে মুসা (আ)-এর আশুরার কাহিনীর সাথে মিলে যায়। তবে যারা এই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন না, তারা রবিউল আউয়াল মাসের প্রতিটা দিন মিলাদুন্নবি হিসেবে পালন করতে দ্বিধাবোধ করেন না।  একদল তো এই পরিসরটাকে আরো বিস্তৃত করে ফেলেছেন। তারা বছরের প্রত্যেক দিনই মিলাদুন্নবি পালন করেন।  এটা হলো মিলাদুন্নাবি পালনের 

মূলভিত্তি সংক্রান্ত কথা।"

আরও পড়ুন: মিলাদুন্নবী সাঃ উদযাপন এর দলীল

(প্রশ্নঃ৩)কিভাবে মিলাদুন্নবির পালন করব?

উত্তর:ইমাম ইবনে হাজার রহ. এরপর বলেন,

"এই দিনে এমন কিছু আমল করা উচিত যা দ্বারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় হয়। যেমন: তিলাওয়াত 

,খাবার প্রদান, দান-খয়রাত , নাতে-রাসূল ও মানুষের অন্তরকে ভাল কাজ ও পরকালের আমলের প্রতি ধাবিতকারী ও দুনিয়া-বিরাগ সংক্রান্ত  কিছু সংগীত ও ইতিপূর্বে যে ধরণের ইবাদতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।



[তথ্যসূত্র:

(১)আল হাওয়ি লিল ফাতাওয়া: ১/২২৯, দারুল ফিকর, বৈরুত

(২) সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ,১/৩৬৬

(৩) আল মাওরিদুর রাবি ফিল মাওলিদিন নববি]

Learn With Iqbal

I'm Muhammad Iqbal Hossain, a language teacher. Languages ignite my passion – their ability to connect us and unlock new worlds. youtube facebook instagram telegram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন