কাউকে জান্নাতি বলার বিধান কি?
- জমির চাচাকে বললাম, চাচা তোমার ছেলে প্রবাস থেকে কবে আসবে?
উত্তরে ৭০ বছরের বৃদ্ধ চাচা বললেন, ' বাজান'রে মালিক ছুটি দেয় নাই'। জিজ্ঞেস করলাম চাচা,- মালিক তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আপনি যারে তারে মালিক বানিয়ে দিচ্ছেন কেন? এটা তো শি র ক! পরক্ষণেই দাঁত কড়মড় করে বললেন, দূর হ ব্যাটা!! দৌড়ে পালিয়ে সেদিন কোন রকমে রক্ষা পেলাম।
- কাঁধে নাঙ্গল নিয়ে ছুটে চলা বন্ধু রফিকের আব্বুকে জিজ্ঞেস করলাম, নদীর তীরে বোরো ধান-ক্ষেতটির প্রকৃত মালিক কে?
উত্তরে বললেন আমার বাপ-দাদারা। বললাম, জমির প্রকৃত মালিক তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আপনার বাপ-দাদারা মালিক হলো কি ভাবে? কোমরে বাঁধা গামছা আর হাতে হালের গরুর ছিপ দেখে সেদিন-ও বাঁয়ে রাস্তা ধরে কোন রকমে জান বাঁচালাম।
পাঠক আপনাকে জিজ্ঞেস করছি- বৃদ্ধ জমির চাচা এবং বন্ধু রফিকের আব্বুর বলা 'মালিক' শব্দটি এবং তাদের প্রতিত্তোরে করা জবাবটিতে ভুল কোথায়?
প্রথমত তাদের উচ্ছারিত 'মালিক' শব্দের মাফহুম এবং আমার জবাবে উদ্দেশ্য 'মালিক' শব্দটির মাফহুম এক নয়।
টিকা: বক্তার উদ্দেশ্য অনুযায়ী উত্তর দিতে না-জানা এক ধরনের অজ্ঞতা। যে অজ্ঞতার দরুন সমাজে বহু ধরনের ফাসাদ তৈরী হতে পারে।
এবার আসি ভিন্ন টপিকে-
আকিদার কিতাবে থাকা "লা-না'তাকিদু আহাদান ফিল জান্নাহ" ইবারতের বাংলা অনুবাদ আর কাফিল উদ্দীন সরকার সাহেবের উচ্ছারিত "আপনি একজন জান্নাতি মানুষ" বাক্যের মাফহুম এক না।
আরও পড়ুন: ট্রান্সজেন্ডার কী? ট্রান্সজেন্ডার কারা?
কাজেই সহজে উপলুব্ধ পরস্পর বিপরীত দুই মেরুর বিষয়টিকে একাকার করে ফেলা বিজ্ঞ মানুষের কাজ হতে পারে না।
বরং আমরা এই মর্মে ঐক্যমত হতে পারি, জাতীয় খতিব রুহুল আমিন সাহেবের "কওমি জননী এবং ইফার বোর্ড অফ গভর্নরসের সম্মানীত সদস্য কাফিল উদ্দীন সরকার সাহেবের " বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারে শেখ মজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী আপনি একজন জান্নাতি মানুষ'সহ এ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো একই সুত্রে গাঁথা। শব্দ চয়ন ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন।
আমাদের ফোকাসটা শুধুমাত্র জননী বা জান্নাতী বানিয়ে ফেলাতে সীমাবদ্ধ না-থাকুক। আমাদের ফোকাসটা হোক সে কু লা রি জম কি ভাবে যুগের আবুল ফযলদের তৈরী করে সেইদিকে। বিস্তর আলাপ উঠুক সে কুদের ফাঁদের ধারাবাহিক স্টেপগুলো নিয়ে। আমাদের আলোচনা হোক ফাঁদ থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে।
ফুটনোটঃ আমার দাদা ষাটের দশকে ইন্তেকাল করেছেন। আমার জীবিত কোন দাদা নেই। রহিমাহুল্লাহ।