ট্রান্সজেন্ডার কী?
ট্রান্সজেন্ডারের ভয়াবহতা। |
আমাদের ভেতরে সব জায়গাতে পশ্চিমাদের অনুকরণ করার প্রবণতা বেড়েছে। তারা কুকুরের সঙ্গে মাখামাখি করলে আমরাও সেটাকে জাতে ওঠার মাধ্যম বলে মনে করি। ঠিক তেমনি একটা ইস্যু হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার।
একজন স্বাভাবিকভাবে ছেলে বা মেয়ে হিসেবে জন্ম নিলো একটা বয়স হওয়ার পর সে হুট করে নিজেকে ছেলে হয়ে মেয়ে বা মেয়ে হয়ে ছেলে দাবী করছে। এটাই ট্রান্সজেন্ডার। সহজে বললে যে বা যারা স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে নিজেদের সৃষ্টিগত জেন্ডার কে সার্জারী অথবা মানসিকভাবে অন্য জেন্ডারে রুপান্তরিত করে তাকে ট্রান্সজেন্ডার বলে।
{getToc} $title={Table of Contents}
ইউরোপের দেশগুলোতে এজন্য অপারেশন করে লিঙ্গ পরিবর্তন করা আবশ্যক নয়। শুধু নিজেকে ছেলে বা মেয়ে যা ইচ্ছা দাবী করলেই হলো! পোশাক বা আচার-ব্যবহারেও কোনো পরিবর্তন আনতে হবে না। বাইরে থেকে শুধু বললেই হয়ে গেলো!
ট্রান্সজেন্ডার সমর্থনের ভয়াবহতা:
★ একজন ছেলে হয়ে মেয়ে দাবী করবে এবং সে যেহেতু তার দাবী মতে এখন একজন মেয়ে তখন সে একজন ছেলে সঙ্গীকে বেছে নিবে। অর্থাৎ সমকামিতা। তা সকল ধর্মে নিষিদ্ধ।
★ কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেনা-ব্যাভিচারেরও প্রসার ঘটবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেক ছেলে কয়েদী হঠাৎ করে নিজেকে মেয়ে দাবী করে মেয়েদের হাজতে ঢুকে পড়ছে এবং খুব সহজেই ব্যাভিচারের প্রসার ঘটাচ্ছে। এটাকে যখন সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে তখন ছেলে নিজেকে মেয়ে দাবী করে মেয়েদের মধ্যে ঢুকে পড়া সহজ হবে এবং মেয়ে নিজেকে ছেলে দাবী করে তার জন্যও ছেলেদের মধ্যে ঢুকে পড়া সহজ হবে।
★ এই ফিতনাহর চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে মানবজাতির স্বাভাবিক বংশবিস্তার রোধ করে মানবজাতির অস্তিত্ব ধ্বংসের মুখে ফেলা। কারণ সমকামিতার প্রসার হলে আর সন্তান জন্ম নিবে না।
হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডার এক নয়:
আমাদের দেশে হিজড়া আর ট্রান্সজেন্ডার এক বলে দেখানো হয়। ২০২৩ শিক্ষা বর্ষের ৭ম শ্রেণির ইতিহাস অনুশীলন বইতে ৫১-৫৬ পৃষ্ঠায় বর্ণিত শরীফার গল্পে হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডার কে এক করে দেখানো হয়েছে। হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি জনসাধারণের সিমপ্যাথিকে কাজে লাগিয়ে ট্রান্সজেন্ডারের অধিকার আইন করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে মিডিয়াগুলোতে মহাপ্রতারণা চলছে। হিজডা আর ট্রান্সজেন্ডার কখনোই এক নয়। হিজড়া হচ্ছে তারা যারা ছেলে না মেয়ে এটা জন্ম থেকেই নির্ধারণ করা একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, তাদের অবয়ব স্পষ্টভাবে বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। মোট জনসংখ্যার ০.১% এরও কম শিশু হিজড়া হয়েছে জন্মগ্রহণ করে। আর ট্রান্সজেন্ডারের সংজ্ঞা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, স্বাভাবিকভাবে ছেলে বা মেয়ে হিসেবে জন্ম নিয়ে একটা বয়স হওয়ার পর সে হুট করে নিজেকে ছেলে হয়ে মেয়ে বা মেয়ে হয়ে ছেলে দাবী করে বসছে। কাজেই হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডার এক নয়।
পশ্চিমাবিশ্বে ট্রান্সজেন্ডারের ভয়াবহ প্রভাব:
ইউরোপ বা পশ্চিমা দেশগুলোতে Z জেনারেশন১৯৯৭ সালের পর যাদের জন্ম,বয়স ২৫-২৬ এর মধ্যে এদের মধ্যে নিজেকে ছেলে হয়ে মেয়ে পরিচয় দেয়া বা মেয়ে হয়েও ছেলে পরিচয় দেয়া বা নিজের লিঙ্গ নিয়ে সন্দিহান হওয়ার হার অনেক বেশি। আমেরিকায় এই হার ২১% এবং ব্রিটেনে এই হার ৪০%। আমেরিকান ৭১% নাগরিক ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতাকে নৈতিকভাবে সঠিক মনে করে।
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে বাংলাদেশে কী হচ্ছে:
আমাদের দেশে টিভি, মিডিয়া, পত্র-পত্রিকায় এটাকে স্বাভাবিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, এটা নিয়ে নাটক হচ্ছে, তথ্যচিত্র হচ্ছে, রিপোর্ট হচ্ছে ইত্যাদি। বাংলাদেশে ট্রান্সজেন্ডাররা বা ছেলে হয়ে মেয়ে দাবীকারী বা মেয়ে হয়ে ছেলে দাবীকারীও যাতে তার দাবী অনুযায়ী সম্পদ পেতে পারে সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে এমন আইন হওয়া নিয়ে খুব জোরেশোরেই আলাপ হচ্ছে।
[উদাহরণ স্বরূপ দেখতে পারেন- ‘ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার রক্ষায় আইন হচ্ছে’ শিরোনামে গত ১১ই নভেম্বর ২০২৩ ঈসায়ী তারিখে হওয়া দৈনিক ইত্তেফাকের রিপোর্ট]।
এর ফলে অনেক মেয়েই ধর্মীয় বিধানকে পাশ কাটিয়ে ছেলে দাবী করে সমান সম্পত্তি দাবী করে সমাজে এক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
বিজ্ঞান দিয়েও ট্রান্সজেন্ডারের সঠিকতা প্রমাণিত নয়:
সবশেষ এটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, সাইন্টিফিকভাবে বা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমেও এর সঠিকতা কোনোভাবেই প্রমাণ করা যায় না।
[ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কে আরো ভালো করে জানতে সিয়ান পাবলিকেশন্স হতে প্রকাশিত সারোয়ার স্যারের লেখা ‘সন্তান প্রতিপালনে এ যুগের চ্যালেন্স’ বইটির ৩৫ পৃষ্ঠা থেকে ৬০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়া যেতে পারে ইন শা আল্লাহ।]