নারীরা কেন পুরুষের চেয়ে অর্ধেক সম্পত্তি পাবে?
আমরা এর সুনির্দিষ্ট উত্তর জানি না। ইসলামের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বা মাকাসিদে শরিয়ার আলোকে একে ব্যাখ্যা করা যায়—ইসলামের কোন বিধানই অযৌক্তিক নয়, তবে ব্যাখ্যা যাই হোক, সর্বাবস্থায় এই বিধান মেনে নিতে হবে। কেউ যদি মনে করে, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীদের সমান সম্পত্তি দিতে হবে, তবে সে আল্লাহর বিধান অমান্য করল, তার মাথায় ঢুকে গেল, 'আল্লাহ বিষয়টি বুঝেননি, আমরা নিজেদের মতো বিধান ঠিক করে নিব।
নারীরা কেন অর্ধেক সম্পত্তি পাবে? সহজ উত্তর হল, যেহেতু মুসলিম পরিবারে পুরুষরা অর্থনৈতিক দায়িত্বগ্রহণ করে থাকেন, কাজেই পুরুষরা দিগুণ সম্পত্তি লাভ করবেন। তবে কোন পরিবারে যদি পুরুষ পঙ্গু হয়, মহিলা দায়িত্বগ্রহণ করে, তবে কি মহিলা দিগুণ সম্পত্তি পাবে? না, মহিলা তখনো সেই অর্ধেকই পাবে। পুরুষরা বেশী দায়িত্ব পালন করে বলে বেশী সম্পদ পান, এটা একটা ব্যাখ্যা। তবে এই বিষয়টি পাওয়া যাক বা না পাওয়া যাক, সর্বাবস্থায় পুরুষরা দিগুণ সম্পত্তি পাবে।
আমরা এশার নামাজ চার রাকআত পড়ি কেন, ফজর কেন পড়ি দুই রাকআত? দিনেরবেলায় আস্তে কেরাআত পড়ি, ফজরে কেন কেরাআত জোরে পড়তে হয়? সহজ উত্তর হল, আল্লাহ পড়তে বলেছেন, তাই আমরা আল্লাহর বিধান মেনে চলি। শরীয়তের অনেক বিধানই এমন—সরল যুক্তিতে সেগুলোকে ধরা যায় না।
আরও পড়ুন: নামাজ পড়লে জান্নাতে যাওয়া যাবে কি?
শরিয়ত অযৌক্তিক—মোটেই এমন নয়, আপনার-আমার অক্ষমতা অনেক বেশী, আমরা 'পিউর রিজন' দিয়ে সবকিছু ধরতে সক্ষম নই। কাজেই আল্লাহ নিজের থেকে অনেককিছু নির্ধারণ করে দিয়েছেন, আমাদের ওপর রহমত করেছেন। যেখানে যুক্তিপ্রয়োগ করতে বলেছেন, সেখানে যুক্তি প্রয়োগ করলে সেটা আল্লাহর ইবাদত। যেখানে যুক্তি দিতে নিষেধ করেছেন, সেখানে প্রশ্নছাড়া আল্লাহর আনুগত্য করাই তাওহীদ-ইতাআত।
ধরুন আপনি একজন ছোটশিশু। আপনি কি যুক্তিপ্রমাণ পেশ করে মায়ের দুধ খেয়েছিলেন? আপনার চোখের ওপর ঘুষি দিতে চাইলে যুক্তিপ্রমাণ ছাড়াই আপনি চোখ বন্ধ করবেন, হাত দিয়ে চেহারা ঠেকাতে চেষ্টা করবেন। একইভাবে আপনি যদি ইসলামকে সত্য বলে মেনে নেন, তবে ইসলামের সব বিধান মেনে নিতে হবে। যদি প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হয়, তবে আরেকটু আগে থেকে প্রশ্ন করুন। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, আপনি কি আল্লাহ-রসূলের প্রতি ঈমান এনেছেন, কুরআনকে জীবনবিধান বলে মেনেছেন?
যদি মেনে নেন, তবে আপনার মনে এত প্রশ্ন কেন, এত সংশয় কেন?