মেমোরি বুস্টিং টেকনিকস: শেখার সময় দক্ষতার সাথে মনে রাখার কৌশল
শেখার সময় মেমোরি উন্নত করার কৌশলগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন নতুন কিছু শিখি, তখন সেই তথ্যগুলো মস্তিষ্কে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা দরকার। এখানে কিছু প্রমাণিত মেমোরি বুস্টিং টেকনিকস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো যা আপনার শেখার দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হবে।
{getToc} $title={Table of Contents}
মাইন্ড ম্যাপিং
মাইন্ড ম্যাপিং হলো একটি ভিজ্যুয়াল টেকনিক যা তথ্যকে গুছিয়ে উপস্থাপন করে। একটি কেন্দ্রীয় ধারণা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে নতুন ধারণা গুলোকে সংযুক্ত করা হয়। এ পদ্ধতিতে মস্তিষ্ক সহজে তথ্য মনে রাখতে পারে।উদাহরণ: ধরা যাক, আপনি একটি নতুন ভাষা শিখছেন। মাইন্ড ম্যাপিং-এর মাধ্যমে আপনি ভাষাটির মূল কাঠামো এবং বিভিন্ন উপাদান যেমন ব্যাকরণ, শব্দভাণ্ডার, প্রণালি ইত্যাদি সম্পর্কে একটি ভিজ্যুয়াল চিত্র তৈরি করতে পারেন। এতে করে মস্তিষ্ক সহজে সংযোগ তৈরি করতে পারে এবং তথ্য মনে রাখতে পারে।
স্পেসড রিপিটিশন
স্পেসড রিপিটিশন হলো তথ্য পুনরাবৃত্তি করার একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যা নির্দিষ্ট সময়ের বিরতিতে পুনরাবৃত্তি করে তথ্যগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে মনে রাখতে সাহায্য করে।উদাহরণ: আপনি যদি একটি বিষয় একবার শিখে নেন, তা হলে সেই তথ্যটি পুনরাবৃত্তি করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে, যেমন এক দিন পর, এক সপ্তাহ পর, এক মাস পর। এই পদ্ধতি আপনার মস্তিষ্ককে তথ্য দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে।
চাঙ্কিং টেকনিক
বড় আকারের তথ্যকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে মনে রাখার পদ্ধতিকে চাঙ্কিং বলে। এটি মেমোরি বুস্ট করার একটি কার্যকরী উপায়। উদাহরণস্বরূপ, একটি বড় সংখ্যাকে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ করে সহজে মনে রাখা যায়।উদাহরণ: ধরা যাক, আপনি একটি বড় সংখ্যার তালিকা মনে রাখতে চান। যেমন, 1234567890123456। এটি বড় এবং মনে রাখা কঠিন। কিন্তু আপনি যদি এটিকে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ করেন, যেমন 1234 5678 9012 3456, তাহলে এটি সহজে মনে রাখা যায়।
একটিভ লার্নিং
শেখার সময় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা উচিত। নোট নেওয়া, প্রশ্ন করা এবং শিখা বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত কিছু তৈরি করা তথ্য মনে রাখতে সাহায্য করে।উদাহরণ: আপনি যদি কোন কিছু শিখছেন, তখন শুধু পড়ার চেয়ে সেই বিষয়ে নোট তৈরি করা, প্রশ্ন তৈরি করা এবং সেই বিষয়ে আলোচনা করা আপনার মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে এবং তথ্য মনে রাখতে সহায়ক হয়।
ভিজ্যুয়ালাইজেশন
তথ্যকে চিত্রের মাধ্যমে মনে রাখার পদ্ধতি হলো ভিজ্যুয়ালাইজেশন। মানসিকভাবে কোনো তথ্যের চিত্র তৈরি করা তথ্য মনে রাখার জন্য একটি কার্যকর কৌশল।উদাহরণ: ধরা যাক, আপনি একটি গল্প মনে রাখতে চান। আপনি সেই গল্পের প্রতিটি দৃশ্য কল্পনা করতে পারেন এবং প্রতিটি দৃশ্যের চিত্র তৈরি করতে পারেন। এই চিত্রগুলো আপনার মস্তিষ্কে সহজে সংরক্ষিত থাকে এবং মনে রাখা সহজ হয়।
নিউমোনিক্স ব্যবহার করা
নিউমোনিক্স হলো এমন কিছু যা মনে রাখতে সহায়ক। এটি একটি বাক্য, গানের লাইন, বা শব্দ হতে পারে যা তথ্যকে মনে রাখতে সহায়ক হয়।উদাহরণ: আপনি যদি একটি তালিকা মনে রাখতে চান, যেমন মোঘল আমলের ভারতবর্ষের সম্রাটদের নাম ধারাবাহিক মনে রাখার জন্য আপনি একটি বাক্য তৈরি করতে পারেন, "বাবার হয়েছিল একবার জ্বর শারিল ঔষধে "। এতে করে প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর সম্রাটের নামের সাথে মিলিয়ে মনে রাখা সহজ হয়। বাবার= বাবর, হয়েছিল=হুমায়ূন, একবার=আকবর,শারিল=শাহ জাহান,ঔষধে= আওরঙ্গজেব।
নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম
শারীরিক ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত ব্যায়াম মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং ঘুমের সময় মস্তিষ্ক তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে, যা মেমোরি উন্নত করে।উদাহরণ: প্রতিদিন ৩০ মিনিটের শারীরিক ব্যায়াম এবং ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং মেমোরি উন্নত করতে সহায়ক।